পাশাঙ্কুশা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য


পাশাঙ্কুশা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য 
.
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে শ্রীকৃষ্ণ যুধিষ্ঠির সংবাদে পাশাঙ্কুশা একাদশী সম্বন্ধে বর্ণিত আছে। ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির বললেন-হে মধুসুদন! আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে যে একাদশী উদযাপিত হয় তার নাম কি? কি তার মাহাত্ম্য অাপনি কৃপাপূর্বক অামায় বলুন- শ্রীকৃষ্ণ বললেন, এই একাদশী সর্বপাপ বিনাশক সর্বশুভদায়ক। এই ব্রতকে কেউ পাপাঙ্কুশা একাদশীও বলে থাকেন।
.
এই তিথিতে যথাবিহিত ভগবান শ্রী পদ্মনাভ -এর পূজা করতে হয়। স্বর্গ-মোক্ষ ছাড়া সর্বপ্রকার অভীষ্পিত ফল পাওয়া যায়। ভূমণ্ডলে যত তীর্থক্ষেত্র বা পবিত্রস্থান আছে সর্বতীর্থের ফল এই একাদশী ব্রত পালনে লাভ হয়। কোন কারণবশতঃ মোহগ্রস্থ মানুষও যদি মোহবশতঃ কোন পাপ কার্যে লিপ্ত হয়, এই একাদশী পালনে তাকে নরকে যেতে হয় না। যারা বিষ্ণুভক্তের নিন্দা করে, বৈষ্ণব হয়ে শিবভক্তের নিন্দা করে, অথবা শিবভক্ত হয়ে বৈষ্ণবকে নিন্দা করে তারা সকলে নরকে গমন করে। ইহ সংসারে একাদশী ব্রতের ন্যায় শ্রেষ্ঠব্রত কদাপি দৃষ্ট হয় না। যারা বিষ্ণু ভক্তের নিন্দা করে তারা সকলেই নরকে গমন করে। হে রাজন !
.
মনুষ্য জন্ম লাভ করে যে ব্যক্তি একাদশী ব্রত করল না, তার দেহটাকে ধিক! তার সকল শুভ কর্মকে ধিক! তার যাগ-যজ্ঞকে ধিক! যিনি একাদশী উপবাসসহ রাত্র জাগরন করেন অনায়াসে- তিনি বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হন। সহস্র অশ্বমেধ যজ্ঞ বা সহস্র রাজসূয় যজ্ঞ করিলে যে ফল পাওয়া যায় সেই ফল শ্রীএকাদশী ব্রত পালনের ফলের ১৬ ভাগের ১ ভাগের সমান নহে। সংসারে একাদশীর সমান কোন পূণ্য নাই। এই ব্রতাচরণকারীর পিতৃকুলের দশ পুরুষ মাতৃকুলের দশ পুরুষ উদ্ধার করতে সমর্থ হন। বালক-যুবা অথবা বৃদ্ধাবস্থায় ব্রত পালন করলে দুর্গতি হয় না। অতি দুরাচার ব্যক্তিও যদি অশ্রদ্ধাভাবে এই ব্রত করে তবে সেও সদ্গতি লাভ করে।
.
তিল, সুবর্ণ, ভূমি, জল, ছাতা, ও পাদুকা সৎপাত্রে দান করলে যমরাজার নিকট আর যেতে হয় না। বিনা সৎকার্যে যারা দিন অতিবাহিত করে তাদের জীবন ধারণ কর্মকারের হাপরের মত বৃথা শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ করা ছাড়া আর কিছু নয়। হে রাজন! এই ব্রতাচরণ ফলে মনুষ্য ইহ সংসারে দীর্ঘায়ু, ধনধান্যে সমৃদ্ধবান ও সর্বরোগরহিত হয়ে থাকে। এ-ছাড়া ভজনশীল ভক্তগণের ভগল্লোক প্রাপ্তি হয়।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ